এক্সক্লুসিভ হ্যান্ডস-অন রিভিউঃ Nokia X
গত ২৫ মার্চ হতে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে মোবাইল জায়ান্ট নকিয়ার বহুল আলোচিত স্মার্টফোন Nokia X। মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস-২০১৪ এ Nokia X এর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে প্রযুক্তিপ্রেমীদের যেনো আলোচনার অন্ত নেই! প্রতীক্ষার সেই প্রহরের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে অবশেষে বাজারে এলো Nokia X ! এতোক্ষণে হয়তো সম্মানিত পাঠকেরা জেনে গেছেন কী কী থাকছে নকিয়ার নতুন এই স্মার্টফোনে। তবে কেমন হবে এর পারফরম্যান্স, কতোটাইবা দৃষ্টিনন্দন এর ইউজার ইন্টারফেস, ক্যামেরায় ছবিই বা আসবে কেমন কিংবা ব্যাটারী ব্যাকআপ ভালো হবে তো অথবা এর গেমিং পারফরম্যান্সই বা কেমন হবে – এসব নানা খুঁটিনাটি প্রশ্নের উত্তর জানাতেই মুঠোফোন ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো Nokia X এর Exclusive হ্যান্ডস-অন রিভিউতে ।
প্রিয় পাঠক, আসুন একনজরে দেখে নিই কী কী ফিচার থাকছে নকিয়ার নতুন এই স্মার্টফোন Nokia X এ –
• ৪ ইঞ্চি স্ক্রীন, যার ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন হলো ৮০০x৪৮০ পিক্সেল এবং পিক্সেল ডেনসিটি (PPI) ২২৩
• ১ গিগাহার্টজের কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এস-৪ প্রসেসর
• অ্যাড্রেনো-২০৩ জিপিউ
• ৫১২ মেগাবাইটের র্যা ম
• ৪ গিগাবাইটের ইন্টারনাল মেমোরী ও ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত এক্সটারনাল মেমোরী কার্ড ব্যবহারের সুবিধা
• ১,৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারী
• ৩.১৫ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামেরা
• অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর, এক্সিলেরোমিটার, প্রক্সিমিটি প্রভৃতি সেন্সর
• মাইক্রো সীম
• ডুয়েল সিম ব্যবহারের সুবিধা
• থ্রিজি, ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, এফএম রেডিও প্রভৃতি
Nokia X এর আনবক্সিং:
স্মার্টফোনটি কেনার পর এর বক্সে আপনি যা যা পাচ্ছেন –
• Nokia X হ্যান্ডসেট
• ব্যাটারী
• চার্জার
• হেডফোন
• ওয়ারেন্টি কার্ড
• ইউজার ম্যানুয়াল
অপারেটিং সিস্টেমঃ
নকিয়ার নতুন এই স্মার্টফোনটিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে হলো অ্যান্ড্রয়েড ৪.১.২ জেলিবিন কাস্টোমাইজ করে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে মজার বিষয় হলো নকিয়া এই অপারেটিং সিস্টেমের নাম দিয়েছে Nokia X Software Platform , উল্লেখ্য, Nokia X এ আপনি কিন্তু সবধরণের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপই চালাতে পারবেন।
বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইনঃ
নকিয়ার নতুন এই ফোনের বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ। বেশ হালকা-পাতলা গড়নের Nokia X প্রথম দৃষ্টিতেই আপনার নজর কাড়তে সক্ষম – এমনটা অনায়াসেই বলা যায়। এর ওজন মাত্র ১২৯ গ্রাম হওয়ায় এটি সহজেই বহনযোগ্য। এর ফিজিক্যাল ডাইমেনসন হলো ১১৫.৫ x ৬৩ x ১০.৫ মিলিমিটার । এটি দেখতে অনেকটা নকিয়া আশা সিরিজের ফোনগুলোর মতোই এবং এর বিল্ড কোয়ালিটিও অনেকটাই ঠিক ঐরকম, কেননা উভয় ধরণের ফোনেই মূলতঃ একই ধরণের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহৃত হয়েছে। এই ফোনের বডি মূলতঃ পলিকার্বনেট দিয়ে তৈরি, ফলে এটি বেশ মজবুত।
এই ফোনের ফিনিশিং বেশ চমৎকার বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে ফোনের কভার খোলা যাবেনা। এর আকর্ষণীয় ডিজাইন ও রং খুব সহজেই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। বাজারে বর্তমানে সাদা, কালো, লাল ও সবুজ এই ৪ রংয়ের Nokia X পাওয়া যাচ্ছে। তবে আপনি চাইলে এর ব্যাককভার অনায়াসেই বদলিয়ে ফেলতে পারবেন। এই ফোনের ডান পার্শ্বে রয়েছে ভলিউম ও পাওয়ার বাটন। ফোনটির উপরের অংশে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটারের অডিও জ্যাক পোর্ট, আর নিচের অংশে রয়েছে চার্জার তথা ডাটা কেবল পোর্ট। আর হ্যাঁ , নকিয়ার নতুন এই ফোনটি কিন্তু মাত্র ১০.৫ মিলিমিটার পুরু!
Nokia X এর অনন্য ডিজাইনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো – এতে একটিমাত্র ক্যাপাসিটিভ বাটন ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রধানতঃ Back বাটনের কাজ করে। তবে সেইসাথে এটি কিন্তু হোম বাটনেরও কাজ করে – কেননা আপনি যেকোন অ্যাপই ব্যবহার করতে থাকুননা কেন, এই বাটনে একবার মাত্র স্পর্শ করেই আপনি হোমে ফিরে আসতে পারবেন। এছাড়া আপনি খানিকটা সময় ধরে এই বাটন চেপে রাখলে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যবহার করা অ্যাপসমূহের তালিকা দেখতে পারবেন।
ডিসপ্লেঃ
Nokia X এ ৪ ইঞ্চির ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রীন ব্যবহার করা হয়েছে। এর ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন হলো ৮০০x৪৮০ পিক্সেল এবং স্ক্রীনের পিক্সেল ডেনসিটি (PPI) ২২৩ । এর ডিসপ্লের টাচ সেনসিটিভিটি বেশ সন্তোষজনক। এর ডিসপ্লেতে গ্লাস ব্যবহার করা হলেও এতে কোন ধরণের প্রোটেকশন ব্যবহার করা হয়নি। এর ডিসপ্লেতে রয়েছে Capacitive two-point touch।
ইউজার ইন্টারফেসঃ
Nokia X এ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম কাস্টোমাইজ করে ব্যবহার করা হলেও এর ইউজার ইন্টারফেস কিন্তু গতানুগতিক অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসমূহের মতো নয়। ইউজার ইন্টারফেসে ভিন্নতা আনতেই এতে রয়েছে উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেম ৮ ও আশা প্ল্যাটফর্মের মিশেল। হোমস্ক্রীনে বিভিন্ন অ্যাপ ও উইজেট টাইলস আকারে সাজানো যায় যা কিনা লুমিয়া সিরিজের ফোনসমূহের ন্যায় । আপনি চাইলে ফোল্ডার তৈরি করেও বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ ও উইজেট সাজাতে পারবেন। এককথায় বলা যায়, Nokia X আপনাকে নতুন এক অ্যান্ড্রয়েড এর ইউজার ইন্টারফেসের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে।
আবার ডানদিকে স্ক্রল করলে আপনি সাম্প্রতিক সময়ে কী কী করেছেন তা দেখতে পাবেনঃ
এই ফোনের নোটিফিকেশন বারটি নিচের মতোঃ
দেখুন Nokia X এর লকস্ক্রীনঃ
সিপিউ ও জিপিউঃ
Nokia X মূলতঃ একটি স্বলবাজেটের ফোন হওয়ায় এতে সিপিউ হিসেবে ১ গিগাহার্টজের ডুয়েল কোর কর্টেক্স এ-৫ প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে । আর এতে জিপিউ হিসেবে রয়েছে অ্যাড্রেনো-২০৩ জিপিউ। এই ফোনে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন MSM8225 এস-৪ চিপসেট ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এতে আপনি অনায়াসেই বিভিন্ন ধরণের অ্যাপস ও গেমস বেশ স্মুথলি চালাতে পারবেন।
র্যামঃ
নকিয়ার নতুন ডিভাইস Nokia X এর র্যাথম হলো ৫১২ মেগাবাইট। যার মধ্য ব্যবহারযোগ্য র্যা ম হলো ৩৮১ মেগাবাইট। তবে দুঃশ্চিন্তার তেমন কিছু নেই। র্যা ম মাত্র ৫১২ মেগাবাইট হলেও এতে বেশ ভালোভাবেই বিভিন্ন গেমস ও অ্যাপ চালানো যায়। ৪০ এর অধিক অ্যাপস চালানোর পরেও এতে প্রায় ৯২ মেগাবাইট র্যা ম ফাঁকা ছিলো।
মেমোরীঃ
Nokia X এর ইন্টারনাল মেমোরী হলো ৪ গিগাবাইটের। এর মধ্যে প্রায় ১.২৯ গিগাবাইট আপনি অ্যাপসের জন্য ও ১.১৭ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি চাইলে এতে এক্সটারনাল মেমোরী কার্ড ব্যবহার করে এর মেমোরী বাড়িয়ে নিতে পারবেন। কেননা, এতে ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত মেমোরী কার্ড সাপোর্ট করে।
নেটওয়ার্কঃ
Nokia X ডুয়েল সিম সুবিধাসম্পন্ন স্মার্টফোন। সিম-১ এ আপনি ২জি অথবা ৩জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারলেও সিম-২ এ শুধুমাত্র ২জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন।
গেমিং পারফরম্যান্সঃ
Nokia X মূলতঃ একটি বাজেট স্মার্টফোন হলেও এর গেমিং পারফরম্যান্স কিন্তু সন্তোষজনক। মাত্র ৫১২ মেগাবাইটের র্যািম ও ডুয়েল কোর প্রসেসর হওয়া সত্বেও এতে জনপ্রিয় অধিকাংশ গেমই কোন ধরণের ল্যাগ ছাড়াই খেলা যায়। আমি এই ফোনে Real Football 2014, Temple Run 2, Subway Surfer প্রভৃতি গেম খেলে দেখেছি যে, কোন ধরণের ল্যাগিং ছাড়াই এসব গেম অনায়াসেই খেলা যায়।
নিচের স্ক্রীনশটগুলো দেখুনঃ
Real Football 2014
Temple Run 2:
Subway Surfer:
অর্থাৎ বলাই যায়, গেমিংয়ের দিক থেকে Nokia X এর পারফরম্যান্স বেশ সন্তোষজনক।
ক্যামেরাঃ
Nokia X এর ক্যামেরা মাত্র ৩.১৫ মেগাপিক্সেলের হলেও এটি বেশ ভালো মানের ছবি তুলতে সক্ষম। এর ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবির রেজ্যুলেশন হলো ১৫৩৬x২০৪৮ পিক্সেল। এই ফোনের ক্যামেরায় আছে ৪x পর্যন্ত ডিজিটাল জুম সুবিধা। এর ক্যামেরায় ফ্ল্যাশ না থাকলেও দিনের আলোতে এটি দিয়ে বেশ ভালো মানের ছবি তোলা যায়, তবে রাতে কিংবা স্বল্প আলোতেও এটি দিয়ে ছবির মান কিন্তু সন্তোষজনক।
নিচের ছবিটি রাতের বেলা তোলাঃ
দেখুন দিনের আলোয় Nokia X এর ক্যামেরায় তোলা ছবিঃ
সন্ধ্যার আগে দিয়ে তোলা ছবি দেখুনঃ
উল্লেখ্য Nokia X এর ক্যামেরায় প্যানোরোমা, ফেস ডিটেকশন প্রভৃতি সুবিধা রয়েছে।
মাল্টিমিডিয়াঃ
Nokia X এ রয়েছে Nokia MixRadio, যার মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেটের সাহায্যে ইচ্ছেমতো যেকোন গান শুনতে পারবেন। এই ফোনের সাউন্ড কোয়ালিটিও বেশ ভালো মানের।
নকিয়ার নতুন এই স্মার্টফোনে রয়েছে স্টেরিও এফএম রেডিও। অনেকে নিশ্চয়ই জানেন, নকিয়ার স্মার্টফোন গুলো তথা লুমিয়া স্মার্টফোন গুলোতে কিন্তু FM রেডিও নাই।
MX Player বা অন্যান্য প্লেয়ারের সাহায্যে আপনি এতে যেকোন ফরম্যাটের ভিডিও চালাতে পারবেন। তবে সমস্যা হলো ১০৮০ পিক্সেলের ভিডিও চালাতে গেলে তা একটু ল্যাগ করে।
ব্যাটারীঃ
Nokia X এ ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারী। একবার চার্জে থ্রিজি নেটওয়ার্কে ১০ ঘন্টারও বেশি এবং টুজি নেটওয়ার্কে ১৩ ঘন্টারও বেশি সময় কথা বলা যাবে। এই ফোনের ব্যাটারীর স্ট্যান্ডবাই টাইম ২৮ দিন। একবার চার্জে অনায়াসেই প্রায় ৭-৮ ঘন্টা গেম খেলা ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে। তবে এর ব্যাটারী ব্যাকআপ সত্যিকার অর্থেই দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে।
কানেক্টিভিটিঃ
নকিয়ার নতুন এই ফোনে রয়েছে ব্লুটুথ ৪.০, ওয়াইফাই, জিপিএস, ওয়াইফাই হটস্পট প্রভৃতি সুবিধা। চমৎকার স্পীড পাওয়া যায় ওয়াইফাই হটস্পটে, কাজেই ওয়াইফাইতে কাজ করে নিঃসন্দেহে ভাল লাগবে।
ডাটা সার্ভিসঃ
Nokia X এ GPRS স্পীড পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৮৫.৬ kbps, অন্যদিকে EDGE স্পীড পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ২৩৬.৮ kbps; থ্রিজি নেটওয়ার্কের আওতায় থাকাকালীন HSDPA স্পীড পাওয়া যাবে ৭.২ Mbps পর্যন্ত, অপরপক্ষে HSUPA স্পীড পাওয়া যাবে ৫.৭৬ Mbps পর্যন্ত।
সেন্সরসমূহঃ
Nokia X এ অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর, এক্সিলেরোমিটার, প্রক্সিমিটি প্রভৃতি সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে । তবে এতে গাইরোস্কোপ কিংবা ম্যাগনেট সেন্সর নেই।
বেঞ্চমার্কঃ
কোন ডিভাইসের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য মূলতঃ তার বেঞ্চমার্ক স্কোর যাচাই করা হয়। বেঞ্চমার্ক যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় অ্যাপসমূহ হলো Antutu, Quadrant, Nenamark প্রভৃতি।
আসুন প্রথমে দেখে নিই Antutu Benchmark এ Nokia X এর স্কোর –
মেমোরী কার্ড ব্যবহার করে Antutu Benchmark এ Nokia X এর স্কোর এসেছে ৫৮৩১, যা হয়তো প্রত্যাশার তুলনায় খানিকটা কম।
তবে মেমোরী কার্ড ছাড়া এর স্কোর ৭০০০ ছাড়িয়ে যায়।
Nenamark এ Nokia X এর স্কোর –
এক্ষেত্রেও Nokia X এর স্কোর ততোটা সন্তোষজনক নয়। Nenamark এ মাত্র ৩২.১ fps স্কোর প্রদর্শন করে । যেখানে সাধারণত ডুয়েল কোর ডিভাইসমূহে প্রায় ৪০ স্কোর আসে, সেখানে Nokia X এর এই স্কোরকে কিছুটা হতাশাব্যঞ্জকই বলা যায়।
BrowserMark এ Nokia X এর স্কোর –
এক্ষেত্রে স্কোর কিছুটা মোটামুটি মানের । BrowserMark এ Nokia X এর স্কোর ১৮৮৫।
সীমাবদ্ধতাঃ
Nokia X মূলতঃ একটি বাজেট স্মার্টফোন হলেও এর কিছু বৈশিষ্ট্যগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন –
• Google Play Store নাই
• ফ্রন্ট ক্যামেরার অনুপস্থিতি
• রিয়ার ক্যামেরায় ফ্ল্যাশ না থাকা
অ্যান্ড্রয়েড প্রেমীদের নিকট এক বহুল জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন Google Play Store, প্রায় ১০ লক্ষাধিক অ্যাপ্লিকেশনের সমাহার রয়েছে গুগলের এই স্টোরে । কিন্তু Nokia X এ নেই Google Play Store! তবে দুঃশ্চিন্তার কিছুই নেই! আপনি চাইলে এতে Google Play Store ইন্সটল করে চালাতে পারবেন। (পরবর্তীতে এই বিষয়ে বিস্তারিত টিউটোরিয়াল প্রকাশ করা হবে) । তবে আপনি কিন্তু এই ফোনে 1mobile, Yandex Store, Go Market প্রভৃতি অ্যাপ মার্কেট ইনস্টল করেও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন চালাতে পারবেন।
রুট অ্যাক্সেসঃ
সাধারণত অ্যাডভান্সড ব্যবহারকারীরা তাদের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসকে রুট করে থাকেন। রুট নিয়ে খানিকটা ঝক্কিঝামেলা পোহানোর ভয়ে কিংবা ওয়ারেন্টি নষ্টের ভয়ে অনেকেই আবার তাদের ডিভাইস রুট করতে চাননা! তবে এদিক থেকে Nokia X এ রয়েছে বিশেষত্ব। কেননা ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে রুটেড আকারেই Nokia X বাজারে ছেড়েছে নকিয়া কর্তৃপক্ষ। ফলে আপনাকে আর কষ্ট করে রুট করতে হবেনা, সেইসাথে থাকছেনা ওয়ারেন্টি হারানোর ভয়ও!
মূল্য ও সিদ্ধান্তঃ
ফোন কেনার পূর্বে বৈশিষ্ট্য অনুপাতে তার মূল্যই ক্রেতার কাছে মূখ্য বিবেচ্য বিষয়। সেক্ষেত্রে বলা যায়, বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় Nokia X এর মূল্য ৯,৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়তো অযৌক্তিক নয়। ছোটখাট ২-১ টি সীমাবদ্ধতা ব্যতীত সকল দিক বিবেচনায় বর্তমানে বাজারে থাকা একই দামের অন্যান্য ফোনের তুলনায় Nokia X – কেই এগিয়ে রাখতে হবে। আপনার বাজেট যদি হয় ১০,০০০ টাকার মধ্যে আর সেইসাথে পেতে চান ভালো মানের স্মার্টফোন, তবে আমার বিশ্বাস Nokia X – ই হবে আপনার প্রথম পছন্দ।
যেহেতু Nokia X দেশের বাজারে নতুন আসা স্মার্টফোন, তাই সম্মানিত পাঠকদের সুবিধার্থেই এই হ্যান্ডস-অন রিভিউটি তুলে ধরা। রিভিউটি পড়ার পর আপনিই সিদ্ধান্ত নিন Nokia X কিনবেন নাকি অন্য কোন ফোন? আর হ্যাঁ , অবশ্যই মন্তব্যের ঘরে রিভিউ সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেননা।